বিকৃতি রোধ করা নারীদেরই দায়িত্ব

 


নারীদের মধ্যে যে মানসিক, নৈতিক ও আত্মিক রোগ ছড়িয়ে পড়ছে, তা প্রতিরোধ করা মুসলিম নারীদেরই কাজ। নারীদের মধ্যে কাজ করা পুরুষদের জন্য কঠিন। তাছাড়া একটি বিকৃতি দূর করার জন্য আরেকটি বিকৃত পথে অগ্রসর হবার অনুমতিও ইসলাম প্রদান করেনা।


যেসব নারী ইসলাম থেকে বিচ্যুত হতে চাননা, তারা যদি জেগে উঠেন এবং অটলভাবে প্রতিরোধ করতে শুরু করেন, তবেই এ বিকৃতি ঠেকানো সম্ভব। নারীদের মধ্যে যারা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করছে, আল্লাহর শোকর, তাদের মধ্যে বিপুল সংখ্যক নারী দীন ইসলাম থেকে বিচ্যুত হয়নি। তারা আল্লাহ এবং রসূলকে মানে এবং ইসলামী বিধি-বিধান পালন করা নিজেদের কর্তব্য মনে করে। এরা যদি ইসলামী আন্দোলনে এগিয়ে আসে এবং ভ্রান্ত সভ্যতা সংস্কৃতি দ্বারা যেসব নারী প্রভাবিত হচ্ছে, তাদেরকে রক্ষা করার চেষ্টা করে, তবে অতি শীঘ্রই নারীদের মধ্যে একটি সংস্কার বিপ্লব বা রেনেসাঁ সাধন হতে পারে।


পুরুষদের মধ্যে কাজ করে আমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তাতে দেখা যায়, খুব কম লোকই বিকৃতিকে বিকৃতি হিসেবে পছন্দ করে। বিরাট সংখ্যক লোক বিকৃতিকে গ্রহণ করেছে ফ্যাশন হিসেবে। এ সংখ্যা পুরুষদের চাইতে নারীদের মধ্যে কম। বিকৃতিকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেছে, এরূপ সংখ্যা পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে অনেক কম। নারীদের মধ্যে যতোটা বিকৃতি ছড়িয়ে পড়েছে, তা ছড়িয়েছে কেবল অজ্ঞতা, মূর্খতা, শিক্ষার অভাব এবং ফ্যাশনের অন্তরালে। নতুবা তারা ধর্ম বিরোধী নয়।


যেসব নারী নারীমহলে কাজ করছেন, তারা বলছেন, বুদ্ধিমত্তার সাথে নারীদের সামনে কুরআন হাদীসের বিধান উপস্থাপন করতে পারলে এবং ইসলাম নারীকে যে মর্যাদা প্রদান করেছে, তা বুঝিয়ে দিতে পারলে খুব দ্রুত তারা তা গ্রহণ করে এবং নিজ পরিবেশে তা প্রচার ও কার্যকর করার জন্য জান-প্রাণ দিয়ে কাজ করে। তাই নারীদের মধ্যে যে বিকৃতি দেখা দিয়েছে, তার জন্য হতাশ হবার কারণ নেই। প্রয়োজন হলো দীনের কাজ করতে আগ্রহী নারীদের এগিয়ে আসা এবং বিকৃতির গতি সুকৃতির দিকে ঘুরিয়ে দেয়া।


কিন্তু এ কাজ যারা করবেন, তাদের পহেলা কাজ হচ্ছে, দীন সম্পর্কে নিজেদের যথার্থ জ্ঞান লাভ করা। তাদের উচিত, মনোনিবেশের সাথে ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন করা। তারপর নারীদের মধ্যে দাওয়াতী কাজ করা, তাদের জন্য সামষ্টিক পাঠের ব্যবস্থা করা এবং ব্যক্তিগত সাক্ষাত ও সহজ সহজ ইসলামী সাহিত্যের মাধ্যমে তাদের মধ্যে দাওয়াতী কাজ করা। একইভাবে স্কুল-কলেজে অধ্যয়নরত নারীদেরও উচিত, নিজেদের কর্তব্য সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করা এবং সহপাঠিনীদের মধ্যে দীনি কাজের সূচনা করা। কিছুসংখ্যক নারী সংশোধনের দিকে এগিয়ে আসতে থাকলে আল্লাহর ইচ্ছায় সহসাই এ কাজ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে।