মাওলানা বলেন, স্বয়ং 'আন্দোলনী' শব্দটিই এই বিশেষ ধরনের মেজাজের কথা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিচ্ছে। আন্দোলনী মেজাজ বলতে বুঝায় আপনি যে আন্দোলন নিয়ে মাঠে নেমেছেন, সে আন্দোলনের ব্যাপারে আপনি অনড় অটল হবেন। সে আন্দোলনের মধ্যে আপনি ডুবে থাকবেন। সে আন্দোলনের জন্য আপনার অন্তর ব্যাকুল থাকবে। পৃথিবীর সবকিছুর তুলনায় সে আন্দোলন হবে আপনার প্রিয়তম। আপনার দেহ-মন, শক্তি-সামর্থ যা কিছু আল্লাহ তায়ালা আপনাকে দান করেছেন, সে আন্দোলনের সাথে এগুলো সব একাকার হয়ে যাবে। সে আন্দোলনের জন্যে প্রশান্তমনে অকাতরে আপনার সবকিছু বিলিয়ে দিতে আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। আপনার মধ্যে যখন এ অবস্থা সৃষ্টি হবে, তখন আপনার মেজাজ হবে 'আন্দোলনী: মেজাজ'।
এখন প্রশ্ন হলো, এরূপ মেজাজ কিভাবে সৃষ্টি করা যায় ?—বহুভাবেই এরূপ মেজাজ সৃষ্টি করা যায় । শিক্ষা শিবিরের মাধ্যমে এ মেজাজ সৃষ্টি হতে পারে। ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়নের মাধ্যমে সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু এ ব্যাপারে সবচেয়ে কার্যকরী পন্থা হলো, আপনি যে আন্দোলনের জন্যে ময়দানে নেমেছেন, সে আন্দোলনের কর্মসূচী বাস্তবায়নে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবেন। আপনি যখন সক্রিয় ভূমিকা নিয়ে সে আন্দোলনে অগ্রসর হবেন, তখন হাজারো বিরোধিতা ও প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন আপনি হতে থাকবেন। সামনে শুধু বিপদ আর বিপদ দেখবেন। নিজের ভবিষ্যত দেখবেন বিপদসংকুল। এ পথে কখনো কখনো আপনাকে মারপিটও খেতে হবে, জেলেও যেতে হতে পারে। আপনার উপর অত্যাচার-নির্যাতনের স্টীমরোলার চালানো হবে। এভাবে আন্দোলনের গোটা কার্যক্রমের সাথে আপনার সম্পর্ক বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
যে কাজে মানুষ আরামে বসে থাকে, দৌড়াদৌড়ি করে না, পরিশ্রম করে না, সে কাজের সাথে ব্যক্তির গভীর সম্পর্কও গড়ে ওঠে না। সে কাজের সাথে অত্যন্ত হালকা সম্পর্কই হয়ে থাকে। আর সে সম্পর্ক ধীরে ধীরে কমতেই থাকে। অবশেষে এমন এক সময় আসে, যখন এ ফায়সালা করা কষ্টকর হয় যে, সে কাজের সাথে ব্যক্তিটির সম্পর্ক আছে, নাকি নেই?